আজ শনিবার, ১৮ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

জন্মদিনে শুভাকাঙ্খীরা দের ভালোবাসায় সিক্ত সাবেক তথ্যপ্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাঈয়িদ

নবকুমার বিশেষ প্রতিনিধি: আজ সাবেক তথ্যপ্রতিমন্ত্রী ড. অধ্যাপক আবু সাঈয়িদের ৭২ তম জন্মদিন ।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক সহ বিভিন্ন ভাবে শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভালোবাসায়সিক্ত হলেন তিনি ।বেড়া,সাথিয়ার আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণ ড.অধ্যাপক আবু সাঈয়িদের দীর্ঘায়ু কামনা করেন। শুভ জন্মদিন।

”ডঃ অধ্যাপক আবু সাইয়িদ” পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার বৃশালিখা গ্রামে ১৯৪৫ সালের ০১ নভেম্বর জন্ম গ্রহণ করেন । তিঁনি ছাত্র জীবন থেকেই আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন । রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত অবস্থায় তিঁনি রাকসুর ভিপি নির্বাচিত হন এবং পড়া-লেখা শেষ করে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়েই শিক্ষক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন । কিছুদিন পরে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশা ছেড়ে রাজনীতিতে পদার্পণ করেন ।

অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ১৯৭১ সালে সক্রিয় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় ৭ নং সেক্টরের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন । স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের সংবিধান প্রনয়ণে তিঁনি উল্লেখযোগ্য ও অসামান্য অবদান রাখেন । ১৯৭০ সালে তিনি বেড়া সাথিয়া সুজানগর এর এম পি এ নির্বাচিত হন । ১৯৯৬ সালে তিনি দ্বিতীয় বার বেড়া সাথিয়ার এম পি নির্বাচিত হন । ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের প্রথম পার্লামেন্টের সদস্য ছিলেন । । ১৯৭৫ সালে তিঁনি পাবনা জেলার গভর্ণর নিযুক্ত হন । অধ্যাপক আবু সাইয়িদ মুলত বাকশালপন্থী রাজনীতিবিদ ছিলেন ।

তিঁনি বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর হতে ১৯৯১ সালের জুন পর্যন্ত একনাগারে বাকশালের জেনারেল সেক্রেটারীর দায়িত্ব পালন করেন । ১৯৯১ সালে এরশাদ হটাও আন্দোলনের মূল রূপরেখা ও আন্দোলন কৌশল মূলত তাঁরই হাতে প্রণীত হয় । ১৯৯১ সালে বাকশালের বিলুপ্তি ঘটলে তিঁনি মূলদল আওয়ামীলীগে প্রত্যাবর্তণ করেন এবং বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পদে অধিষ্টিত হন ।

১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়া) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নির্বাচিত প্রার্থী হিসাবে তিঁনি নির্বাচন করেন এবং তৎকালীন জামাতে ইসলামীর প্রার্থী ও জামাতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটির জেনারেল সেক্রেটারী মরহুম মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর নিকট সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন । ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উক্ত আসন হতে তিঁনি প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংসদ নির্বাচিত হন এবং ১৯৯৬ সালের ০৬ জুন হতে ২০০১ সালের ১৫ জুলাই পর্যন্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতি মন্ত্রী হিসেবে অত্যন্ত সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন ।

মন্ত্রী থাকাকালীন অবস্থায় তিঁনি পাবনা জেলায় ব্যাপক উন্নয়নমুলক কর্মকান্ড সমপন্ন করেন ও অত্র এলাকার বিপুল সংখ্যক বেকার জনগোষ্ঠির কর্মসংস্হানের ব্যবস্থা করেন । অধ্যাপ আবু সাইয়িদ বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ, বাংলাদেশের রাজনীতি ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার উপর অনেক বই রচনা করেন । যার মধ্যে ০১। ফ্যাক্টস্ এন্ড ডকুমেন্টস ০২। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড: ট্রায়াল পার্সপেক্টিভ এ্যান্ড ভারডিক্ট ০৩। মেঘের আড়ালে সূর্য্য ০৪। ছোটদের বঙ্গবন্ধু ০৫। বাংলাদেশের গেরিলা যুদ্ধ ০৬। জেনারেল অ্যামনেষ্টি ও গোলাম আযম ০৭। যুদ্ধের আরালে যুদ্ধ ০৮। আমি বেঁচে থাকবো ০৯।

ব্রুটাল ক্রাইম: ডকুমেন্টস ১০। অঘোষিত যুদ্ধের ব্লু-প্রিন্ট বইগুলো অন্যতম । এর মধ্যে কিছু সংখ্যক বই তৎকালীন বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে (২০০১-২০০ মেয়াদকালীন সময়ে) বাজেয়াপ্ত করা হয় । এছাড়াও তিঁনি অসংখ্য নাটক, কবিতা রচনা করেন । তিঁনি বাংলা একাডেমীর একজন আজীবন সদস্য । তিঁনি বেড়া-সাঁথিয়া এলাকার তথা সমগ্র পাবনা জেলার উন্নয়নের জন্য সারা জীবন নিরলস পরিশ্রম করেছেন ও বেড়ার মুজিব বাঁধসহ নানান ধরণের বড় বড় উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড সম্পন্ন করেছেন যার জন্য এখনো বেড়া-সাঁথিয়া এলাকার মানুষ তাঁকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে । তাঁর মতো জ্ঞানী ও পন্ডিত ব্যক্তিত্ব পাবনা জেলার অহংকার ।তিনি বেঁচে থাকবেন লক্ষ কোটি সাধারণ মানুষের হৃদয়ে ।